জিরো বাউন্ডারি কবিতার দ্বিতীয় সংখ্যার জন্য লেখা জমা দেওয়ার লাস্ট ডেট নভেম্বরের ১০ তারিখ। দুটো কবিতা বা কবিতা বিষয়ক লেখা নিজের এক কপি ছবি সমেত পাঠিয়ে দিন আমাদের ইমেলে-0boundarykabita17@gmail.com

জ্যোতির্ময় মুখার্জ্জি




Slice poetry


প্রশ্নটা অনেকের মনেই আসতে পারে,
বা আসবেই হয়তো,
আরে, slice poetry টা আবার কী বস্তু?
খায় না মাথায় দেয়‌?

এই কৌতুহল নিবারণের জন্য আসুন দেখা নেওয়া যাক, Slice poetry আসলে কী বস্তু....

স্লাইস পোয়েট্রির, সবচেয়ে মজার দিকটা হলো, এটা ইচ্ছাকৃতভাবে লেখা সম্ভব নয়, এটা হঠাৎ করে আবার তৈরী হতে পারে, বা হয়তো কবে তৈরী হবে এই কবিতা কেউ জানেনা।

এই পৃথিবীতে প্রকৃতির খেয়ালে সৃষ্ট এমন অনেক কিছুই আছে যেটা দেখে আমরা বিষ্মিত হয়, সেই শিল্প, সেই সৌন্দর্য একমাত্র প্রকৃতি সৃষ্টি করতে পারে, মানুষ ইচ্ছা করলেও পারেনা, প্রকৃতির সেই বিষ্ময়কর সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে আমরা স্বীকার করতে বাধ্য হই,
Oh! Yes! Nature is the best artist. আর সেই সৃষ্টিগুলোকে চিহ্নিত করি, natural wonder হিসেবে,

ঠিক একই ভাবে, আমরা স্লাইড কবিতাকে বলতে পারি,
'The wonder of poetry'

অর্থাৎ খুব সহজেই বোঝা যাচ্ছে, slice poetry ইচ্ছাকৃত বা চেষ্টার্জিত নয়, এখানেই মূলতঃ লুকিয়ে আছে এর বিষ্ময়কর সৌন্দর্যটা।

আসুন, এরপর আমরা চোখ রাখি, Slice poetry-র বৈশিষ্ট্যগুলোর দিকে:

১। পূর্ব প্রস্তুতিহীন, হঠাৎ, স্বতঃস্ফূর্তভাবে একাধিক কবি দ্বারা লিখিত, বা আরো ভালোভাবে বলতে গেলে তারা যেন নিজেদের মধ্যে জমিয়ে আড্ডা দিচ্ছে, তাদের কথোপকথন তুলে ধরছে কবিতার মোড়কে, তাদের রঙ্গ রসিকতা, তাদের বক্তব্য ভিজিয়ে নিচ্ছে কাব‍্যরসে, এবং সর্বোপরি তাদের বক্তব্যগুলো কেন্দ্রীয় ভাবে একটা কবিতার জন্ম দিচ্ছে।

২। পূর্ব পরিকল্পনাহীন জমাটি আড্ডা যখন (যেমন আমাদের রকের আড্ডা) তখন তা কখনোই নির্দিষ্ট বিষয়কে কেন্দ্র করে আবর্তিত হবে না, এগিয়ে যাবে এক বিষয় থেকে অন্য বিষয়ে পাক খেতে খেতে, বিষয়ের এই বহুগামিতা Slice poetry-র
অন‍্যতম গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য।

৩। একাধিক কবি যখন, তখন তাদের লেখা কবিতার ভাষা, শব্দ ঝোঁক, আঙ্গিক, ও ফরমেশনেরও পার্থক্য থাকবেই, আবার পূর্ব পরিকল্পনাহীন, তাই কোথাও তাদের সামনে টেনে দেওয়া নেই কোনো গন্ডি, তাই তারা বল্গাহীন ভাবে তাদের মেধার স্ফূরণ ঘটাতে পারবে, স্বাধীন ও স্বতঃস্ফূর্তভাবে বলে যেতে পারবে তাদের বক্তব্য, পূর্ববর্তী কেউ ঠিক কী লিখছে, তাকে অনুসরণ করার দায়টুকুও নেই,
যেন, বিকালের পার্কে খেলা করা একদল বাচ্চা, ছুটছে, দৌড়াচ্ছে, লাফাচ্ছে, ডিগবাজি মারছে মনের আনন্দে, P.T class এর শৃঙ্খলতা নয়, এই সহজ স্বাভাবিক উচ্ছৃঙ্খলতাই সৃষ্টি করেছে অনাবিল সৌন্দর্যের,
একাধিক কবির, উচ্ছৃংখল বোহেমিয়ানতাতেই স্লাইস কবিতার মূল chemistry-টা লুকিয়ে আছে।

৪। পূর্ব পরিকল্পনাহীন, তাই শুরু বা শেষের কোনো নির্দেশ নেই, কোনো দায় নেই কবির ট্রাফিক আইন মেনে গাড়ি চালানোর,
ভ্রুউউউউমমমম...করে গাড়ি স্টার্ট দিয়েই ক‍্যাআআআআচচচচ্ করে কষে দিতে পারে ব্রেক, বা ছোটাতে পারে তার গাড়ি ফুউউউউল স্পিডে,
অ্যাক্সিডেন্ট হতে পারে?
হোক, কবি আর কবিতাকে রেড সিগন্যাল দেখানোর সাহস কার আছে?

হ‍্যা, তবুও তো সিগন্যাল মেনেই আমাদের ছোটাতে হয় গাড়ি, লিখতে হয় কবিতা,

আচ্ছা, সত্যি করে বলুন তো, তাতে কি কোনো মজা আছে? ওই খুচ্ খুচ্ করে গাড়ি চালিয়ে?
না নেই মশাই....আর এই আনন্দের খোঁজেই আমাদের শূণ‍্যে পাড়ি।

জিরো বাউন্ডারি কনসেপ্টে আমরা পেয়েছি সেই আনন্দ, আমাদের সামনে fully green signale, সৃষ্টি সুখের উল্লাসে করতে পারি আমরা যা খুশি,

শর্ত শুধু একটাই, আপনার driving license টা আছে তো?
বুইল্লেন না ব‍্যাপারটা?
আরে মশাই, গাড়িটাতো ঠিকঠাক চালাতে জানতে হবে নাকি?

তাই, আজ দ্বীধাহীন ভাবে বলতে পারি, slice poetry বাংলা সাহিত‍্যে এক্কেবারে নতুন ও ভিন্ন ধরনের কবিতা, যা আগে কখনো হয়নি, এবং এটি সম্পূর্ণভাবে জিবাকের সন্তান, আর নাতি/নাতনির নামকরণ তো দাদু/ঠাকুমাই করে,

তাই, স্বাভাবিক ভাবেই এর নামকরণও করছেন আফজল আলি মহাশয়।

আমরা কিন্তু এই new born baby টাকে নিয়ে খুব আনন্দে মেতে আছি, দেখতে পাচ্ছি এক অনন্ত সম্ভাবনা এর মধ্যে,

অনেক হয়েছে পাশ্চাত্য থেকে টোকাটুকি, এবার তারা টুকুক আমাদের কাছ থেকে, মানে এবার পাশ্চাত্য ঘাড় ঘোড়াক বাংলা সাহিত্যের, টুকুক ওরা আমাদের থেকে,

I mean to say,
এটা তো ultimately বাংলা সাহিত‍্যেরই সম্পদ, জিবাক জন্ম দিয়েছে এটা ঠিক কথাই, কিন্তু সন্তান কি চিরদিন বাবা-মায়ের আঁচলের তলায় থাকে?

না থাকে না, রাখতেও চায়না জিবাক।

এখন 'স্লাইস পোয়েট্রি' বাংলা সাহিত্যের সম্পদ।





No comments: